সূচিপত্র
জোয়ার এবং ভাটার সংজ্ঞা
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবীর সাগর বা মহাসাগরের জলরাশি কিছু অংশ ফুলে যাওয়াকে জোয়ার এবং জলস্তর নিচে নেমে যাওয়াকে ভাটা বলা হয়। পৃথিবীতে প্রধানত দুটি নিয়মে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়।
জোয়ার-ভাটা সৃষ্টির কারণসমূহ
-
চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব
- নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে।
- সূর্য, পৃথিবী, এবং চাঁদের পরস্পর আকর্ষণের ফলে চাঁদের তুলনায় সূর্যের আকর্ষণ ক্ষমতা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
- চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি থাকায় তার মহাকর্ষ শক্তি সূর্যের তুলনায় বেশি প্রভাব ফেলে এবং জোয়ার সৃষ্টি করে।
-
পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব
- পৃথিবীর আবর্তন গতির কারণে সৃষ্টি হয় কেন্দ্রাতিগ বল।
- পৃথিবীর যে পাশে চাঁদ থাকে, সেখানে কেন্দ্রাতিগ বল অপেক্ষা মহাকর্ষ বলের প্রভাব বেশি থাকে।
-
অন্যান্য কারণ
- সমুদ্রের জলরাশির উষ্ণতা
- সমুদ্র সৈকতের ঢাল
- সমুদ্রের জলস্তরের স্বাভাবিক উঠানামা
প্রতিদিন একই সময়ে জোয়ার-ভাটা না হওয়ার কারণ
- পৃথিবীর একবার পূর্ণ আবর্তন করতে সময় নেয় ২৪ ঘন্টা।
- চাঁদের নিজের কক্ষপথে পৃথিবীকে ঘুরতে সময় লাগে ২৭.৫ দিন।
এই কারণে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে জোয়ার হলেও সেটি একই সময়ে ঘটে না।
জোয়ার এবং ভাটার বিভিন্ন সময়ের ব্যবধান
- দুটি মুখ্য জোয়ারের মধ্যে ব্যবধান: ২৪ ঘন্টা ৫২ মিনিট ৪০ সেকেন্ড
- দুটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে ব্যবধান: ২৪ ঘন্টা ৫২ মিনিট ৪০ সেকেন্ড
- মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময় পার্থক্য: ১২ ঘন্টা ২৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড
- জোয়ার-ভাটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান: ৬ ঘন্টা ১৩ মিনিট ১০ সেকেন্ড
মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের উৎপত্তি
-
মুখ্য জোয়ার
- পৃথিবীর যে অংশটি চাঁদের সম্মুখে আসে, সে অংশের জল ফুলে ফেঁপে ওটাকে মুখ্য জোয়ার বলে।
- চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি থাকায় তার আকর্ষণ বেশি প্রভাব ফেলে।
-
গৌণ জোয়ার
- পৃথিবীর আবর্তন গতির কারণে যে অংশ মুখ্য জোয়ারের বিপরীত দিকে থাকে, সেখানে কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে গৌণ জোয়ার সৃষ্টি হয়।
- এই জোয়ারে চাঁদের আকর্ষণের চেয়ে কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাব বেশি থাকে।
দিনে দুবার জোয়ার-ভাটা হওয়ার কারণ
পৃথিবীর প্রতিটি অংশ ১২ ঘন্টা ২৬ মিনিট অন্তর অন্তর চাঁদের সম্মুখে এবং তার বিপরীত দিকে চলে আসে। এর ফলে পৃথিবীতে দিনে দুবার জোয়ার ও দুবার ভাটা ঘটে।
- (24 votes)
0 মন্তব্যসমূহ