সূচিপত্র
হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলি বর্ণনা:
হিমবাহের ক্ষয়কারী প্রধানত তিন প্রকার ক্ষয় সাধন, বহন, সঞ্চয় হিমবাহের গতি ও বরফের পুরুত্ব এবং শিলা প্রকৃতির উপর হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ক্ষমতা নির্ভর করে হিমবাহ ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গুলি হল–সার্ক বা করি:
পার্বত্য হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট আরামকেদারার নেয় সৃষ্ট ভূমিরূপকে সাগ বা করি বলা হয়।গঠন: এর তিনটি অংশ তিনভাবে তৈরি হয় যথা–
(১) আবঘর্ষ প্রক্রিয়া ফলে সৃষ্ট তলদেশের গভীর বেশি
হয়
(২) উৎপাটন প্রক্রিয়ায় ক্ষয় কার্যের দ্বারা সৃষ্ট পিছনে খাড়া মস্ত প্রাচীরের নেয় এগুলি ৭০০ থেকে ৮০০ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট হয়।
(৩) এবং কম ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট সম্মুখের চৌকাঠের ন্যায় উঁচু অংশ এবং করিওষ্ঠ বরফ মুক্ত করিতে জল জমলে সৃষ্টি হয়। এ ধরনের হ্রদ গুলিকে করি বা টান হদ বলা হয়। এই ধরনের হিমালয় হিমালগ্ন সংলগ্ন অঞ্চলে দেখা যায়।
উদাহরণ– আন্টার্কটিকার ওয়াল কট নামক সার্ক পৃথিবীর গভীরতম সার্ক।
হিম শিরা বা এরিটি:
কি মোবাইল ক্ষয়কার যে ফলে পাশাপাশি দুটি সার্ক সৃষ্টি হলে তাদের মাঝের বিভাজিকা টি ও ক্ষয়প্রাপ্ত ও সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার ফলে শৈলশিরা আকারে অবস্থান করে। ওই ধরনের শৈলশিরাকে হিমশিরা বা এরিটি বলা হয়।বৈশিষ্ট্য (১) এরিটির কোন অংশ যদি ভেঙে যায় তাহলে সার্ক থেকে অন্য সার্কে যাওয়ার পথকে গিরিপথ বলা হয়।
(২) এগুলি ছুলির ফলা নেয় এবং তীক্ষ্ণ করাতে দাঁতের খাজ কাটার মত হয়।
উদাহরণ– এ ধরনের সার্ক আল্পস পর্বতমালা অঞ্চলে দেখা যায়।
পিরামিড চূড়া: কোন শৃঙ্গের চারিদিকে এরিটি থাকলে সেই পর্বত শৃঙ্গকে পিরামিড চূড়া বলে।
U আকৃতি উপত্যকা বা হিমদ্রোণী:
হিমবাহ দ্বারা সৃষ্ট উপত্যকাকে হিমদ্রোণী বলা হয়।গঠন: যে উপত্যকার মধ্য দিয়ে হিমবাহিত প্রবাহিত হয়। এবং সেই উপত্যকাটি হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে অত্যন্ত মসৃণ এবং তলদেশ ও পার্শ্বদেশ খাড়া ঢালের বিশিষ্ট উপত্যকায় পরিণত হয়। এ ধরনের উপত্যকা গুলি দেখতে অনেকটা ইংরেজি U আকৃতির হয়। এরূপ উপত্যকাকে U আকৃতির উপত্যকা বলা হয়।
বৈশিষ্ট্য-(১) এরূপ উপত্যকা অনেক সময় হিমবাহের বরফ গলা জল জমে হ্রদের সৃষ্টি হয়।
(২) অনেক সময় এই ধরনের হিমদ্রোণী উপত্যকাতে সিঁড়ি ধাপের মতো রূপ দেখা যায়।
যেমন– হিমালয়ের রূপ কুণ্ড।
ঝুলন্ত উপত্যকা:
প্রধান হিমবাহের উপর উপহিমবাহ গুলির অবস্থানকে ঝুলন্ত উপত্যকা বলা হয়।গঠন: যেমন উপনদী গুলি মূল নদীতে এসে পড়ে। তেমনি পার্বত্য অঞ্চলে অনেক সময় ছোট ছোট কয়েকটি উপ হিমবাহ বিভিন্ন দিক থেকে এসে প্রধান হিমবাহ সঙ্গে মিলিত হয়। এবং ছোট বড় সব হিমবাহ গুলি ক্ষয়কার্যের দ্বারা পৃথক পৃথক হয়ে ঝুলন্ত উপত্যকা সৃষ্টি করে। এবং এইসব কারণেই হিমবাহ গুলি সরে গেলে মনে হয় উপ হিমবাহ গুলি প্রধান হিমবাহের উপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে এরকম ভূমিরূপ ঝুলন্ত উপত্যকা নামে পরিচিত।
যেমন– আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়সিমিতি উপত্যকায় মার্সেদ নদীর উপর এরূপ ঝুলন্ত উপত্যকা দেখা যায়।
রসে মতানে:
হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে একদিন মসৃণ ও একদিক অমসৃণ ভূমি ভাগ্ কে রসে মতানে বলা হয়।গঠন: হিমবাহের প্রবাহের পথে যখন কোন কঠিল শিলা উঁচু ভূমিরূপের আকার অবস্থান করলে হিমবাহের ক্ষয়ের ফলে ওই ভূমিরূপের প্রতিবাদ ঢাল হিমবাহ প্রবাহের ফলে একদিক মসৃণ ও চকচকে হয়। এবং অনুবাদ ঢালে অর্থাৎ বিপরীত দিকটা উৎপাটন ক্ষয় এর মাধ্যমে অসমতল বা খাজকাটার সৃষ্টি হয়। এর ভূমিরূপ কে রসে মতানে বলা হয়।
বৈশিষ্ট্য: (১) রসে মতানে একটি মাত্র শিলার উপর কার্যকরী হয়।
(২) রসে মতানে উচ্চতা বেশি হলে বিস্তৃতি ও দৈর্ঘ্য কম হয়।
উদাহরণ– এছাড়াও কাশ্মীর উপত্যকার ঝিলাম নদীর উপনদী লিডার নদীর উপত্যকায় রসে মতানে দেখা যায়।
ফিয়র্ড:
সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে অনেক সময় হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে যে গভীর উপত্যকার সৃষ্টি হয় তাকে ফিয়র্ড বলা হয়। এ ধরনের উপত্যকা গুলি সমুদ্রপৃষ্ঠের থেকে নিচু হওয়ার ফলে বরফ মুক্ত হয় এবং সমুদ্রের জল ভরে যায় এবং জলমগ্ন এরূপ উপত্যকাকে ফিয়র্ড বলা হয়।বৈশিষ্ট্য: (১) ফিয়র্ড উপকূলে জলের গভীরতা বেশি হওয়ার জন্য মধ্যভাগের তুলনায় প্রান্ত ভাগে জলের গভীরতা খুবই বেশি হয়।
উদাহরণ– যেমন নরওয়ের সজনে ফিয়ড পৃথিবীর গভীরতম ফিয়র্ড ।
- (24 votes)
0 মন্তব্যসমূহ