সূচিপত্র

# সার্বভৌম ভারত: একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রকৃতি

ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে "একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র" বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে ভারতের সার্বভৌমিকতা এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সার্বভৌমত্বের ব্যাখ্যা

সার্বভৌমত্ব বলতে রাষ্ট্রের নিরঙ্কুশ, সর্বোচ্চ ও স্বাধীন ক্ষমতা বোঝায়। এটি দুটি মূল দিক রয়েছে:

  • অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমিকতা: রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে তার আইনের সর্বোচ্চতা।
  • বাহ্যিক সার্বভৌমিকতা: বাইরের কোনো শক্তির প্রভাব ছাড়া স্বাধীন ক্ষমতা।

ভারতকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ ভারতের ভৌগোলিক সীমানায় রাষ্ট্রীয় আইনই চূড়ান্ত।

## সমাজতান্ত্রিক ভারত: সংবিধানে সমাজতন্ত্রের অন্তর্ভুক্তি

১৯৭৬ সালে সংবিধানের ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে "সমাজতান্ত্রিক" শব্দটি প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে ভারতীয় সমাজতন্ত্রকে একটি "মিশ্র অর্থব্যবস্থা" হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যা ব্যক্তিগত মালিকানার স্বীকৃতি দেয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এটিকে "আমাদের নিজস্ব ধরনের সমাজতন্ত্র" বলে উল্লেখ করেছিলেন।

### ভারতীয় সমাজতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য

  1. ব্যক্তিগত মালিকানার সাথে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ।
  2. গণতান্ত্রিক সমাজবাদের ধারণা, যা পুরোপুরি সমাজতন্ত্র নয়।
  3. সাম্প্রতিক পিপিপি (Public Private Partnership) উদ্যোগ।

## ধর্মনিরপেক্ষ ভারত: ধর্মীয় সহনশীলতার প্রকৃতি

ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, যা "সর্বধর্ম সমভাব" ধারণাকে সম্মান করে। ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংশোধনীতে প্রস্তাবনায় "ধর্মনিরপেক্ষ" শব্দটি যোগ করা হয়। তবে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ নির্দিষ্ট করা হয়নি, ফলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক সংগঠন এ শব্দটির ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে।

## গণতান্ত্রিক ভারত: গণতন্ত্রের স্বরূপ

ভারতকে "গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক সাম্য এবং সামাজিক সাম্যের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। আম্বেদকর এবং নেহরু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সাম্যের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেছেন।

### গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতা

  • উৎপাদনের উপাদানের ওপর ব্যক্তিগত মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
  • রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন এবং সংবিধানের ৩৫৬ নং ধারা প্রয়োগের মাধ্যমে নাগরিক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা।

## সাধারণতন্ত্র হিসেবে ভারত

ভারতকে একটি সাধারণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কারণ এখানে রাষ্ট্রপ্রধান উত্তরাধিকারসূত্রে ক্ষমতা লাভ করেন না, বরং জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হন। যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথের সদস্যপদ গ্রহণ করার পরেও ভারতের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হয়নি, কারণ এটি একটি স্বেচ্ছামূলক প্রতিষ্ঠান।

4.5 / 5

- (24 votes)