সূচিপত্র
ভারতের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের প্রধান কারণ
ভারতের জলবায়ু বিভিন্ন ভৌগোলিক উপাদান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, যা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান কারণগুলো নিম্নরূপ:
অবস্থান ও বিস্তার
- ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু কন্যাকুমারী থেকে উত্তরে লাদাখ পর্যন্ত বিস্তৃত।
- কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের প্রায় মাঝখান দিয়ে প্রসারিত, যা দক্ষিণে উষ্ণমণ্ডল এবং উত্তরে নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলকে প্রভাবিত করে।
- ভারতীয় উপদ্বীপীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় বৃষ্টিপাত-সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
হিমালয় পর্বতে অবস্থান
- উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বত সাইবেরিয়ার শীতল বাতাস থেকে ভারতকে রক্ষা করে।
- দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হিমালয়ে বাধা পেয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, যা ভারতের শীতের প্রকোপও হ্রাস করে।
সমুদ্র থেকে দূরত্ব
- ভারতের বিশাল ভূখণ্ডের কারণে, সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত অঞ্চলে চরম জলবায়ু থাকে, যেমন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি।
- অন্যদিকে, সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে সমুদ্র বায়ুর প্রভাবে সমভাবাপন্ন আবহাওয়া থাকে, যেমন চেন্নাই, মুম্বাই।
ভূপ্রকৃতি
- উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে তাপমাত্রা কমে; প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা ৬.৪° হারে হ্রাস পায়।
- উদাহরণস্বরূপ, কাশ্মীর, দার্জিলিং, সিমলা, উটি অঞ্চলে শীতল জলবায়ু বিরাজমান।
- পশ্চিমঘাট পর্বতে বাধা পেয়ে পশ্চিমে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে, কিন্তু পূর্ব অংশে কম বৃষ্টিপাত হয়, যেমন বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল শিলং।
মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ
- ভারতের জলবায়ু মৌসুমি বায়ুর উপর নির্ভরশীল হওয়ায় দেশটিকে "মৌসুমি জলবায়ুর দেশ" বলা হয়।
- গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়; শীতকালে উত্তর-পূর্ব শুষ্ক মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়, যা প্রায় বৃষ্টিপাত ঘটায় না।
জেট বায়ুর প্রভাব
- জেট বায়ুর কারণে গ্রীষ্মে ভারতে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়, যা প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
- তিব্বতে উষ্ণতা কম থাকলে জেট বায়ু দুর্বল হয়, যার ফলে অনিশ্চিত বৃষ্টিপাত দেখা যায়।
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের প্রভাব
- আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের কারণে সৃষ্টি ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের জলবায়ুকে প্রভাবিত করে।
- ঘূর্ণবাত উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং কিছুটা তাপমাত্রা কমে যায়।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব
- শীতকালে পশ্চিমা বায়ু পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন অংশে তুষারপাত ও বৃষ্টিপাত ঘটায়, শীতের তীব্রতা বাড়ায়।
এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব
- এল নিনো: এটি মৌসুমি বায়ুর আগমনে বিলম্ব ঘটায়, যা ভারতে খরা সৃষ্টি করতে পারে।
- লা নিনা: এল নিনোর বিপরীত অবস্থায় প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং ভারতে বন্যার কারণ হতে পারে।
এগুলি ভারতের জলবায়ুকে প্রভাবিত করে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৈচিত্র্যপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি করে।
- (24 votes)
0 মন্তব্যসমূহ